চট্টগ্রামের আকবরশাহ পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শনে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ, বায়েজিদ, খুলশীসহ নগরের পাহাড়গুলো কেটে সাবাড়ের মহোৎসবের সংবাদ পেয়ে পরিদর্শনে গেছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা নগরের আকবরশাহ এলাকার বেশ কয়েকটি এলাকার পাহাড় কাটা পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন এবং দ্রততার সাথে দাগের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানাসহ পরিবেশ আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের বিষয়ে নির্দেশনা দেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আকবরশাহ এলাকার উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের উত্তর লেকসিটি, হারবাতলী, শাপলা ও লতিফপুর ওয়ার্ডের মিরপুর এলাকায় চলমান পাহাড় কাটার পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন তাঁরা।
এসময় মন্ত্রণালয় থেকে আগত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আকবরশাহ থানা এলাকার উত্তর লেকসিটি, হারবাতলী, শাপলা ও মিরপুর এলাকার অন্তত ১৫টি কর্তনকৃত পাহাড়, কালীরছড়া খাল ভরাট করে নির্মিত স্থাপনা পরিদর্শন করেন। এসময় পাহাড় কাটার সময় কয়েকজনকে তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানা প্রদান করেন ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়াও যেসব দাগের পাহাড় কাটা হয়েছে, সেসব দাগের মালিক ও যারা কেটেছে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা। এছাড়াও কালীরছড়া খাল থেকে দখলদারদের উচ্ছেদপূর্বক খালের অংশ দখল মুক্ত করা, উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন, যেসব পাহাড় কেটে গত কয়েকদিন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো ম্যাজিস্ট্রেসী অভিযান দিয়ে উচ্ছেদ ও আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশনা দেন।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, যুগ্ম সচিব মো. রেজাউল করিম, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিচালক হাসান হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর পরিচালক সোনিয়া সুলতানা, চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক মো. মোজাহিদুর রহমান, কাট্টলী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী, আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. মামুন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনিরা পারভীন রুবা, সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী মো. শফিকুল ইসলাম খান, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ, সহকারী পরিচালক মো. হাসান আহম্মদ, পরিদর্শক রুম্পা সিদকার, সিনিয়র টেকনিয়াশ মো. ওমর ফারুক প্রমুখ।
পরিদর্শনকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম বলেন, আমরা গত কয়েকদিন লক্ষ করেছি- দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু ভূমিদুস্যু চট্টগ্রাম নগরজুড়ে পাহাড় কাটার প্রতিযোগিতা করছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি মামলা ও জরিমানা আদায় করেছে। বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের মন্ত্রণালয় যতরকম আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে তার প্রয়োগ ঘটাবে। আমরা লক্ষ করছি কাগজে-কলমে খিলা উপস্থাপিত হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে এটা টিলা/পাহাড়। আমরা বাস্তবিক দৃশ্যমান বিষয়টিকে প্রাধান্য দিব। এটা যদি পাহাড় হয় খিলা আর সমতলের কাগজ বিবেচনা নয়, পাহাড় হিসেবেই আমরা জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছি।
এছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের আরেকটি টীম নগরের খুলশীতে পাহাড় কাটার সময় অভিযান চালিয়ে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ও মামলা দায়ের করে। পাশাপাশি নগরের বায়েজিদ ও রৌফাবাদে পাহাড়কর্তনকারীদের সর্বোচ্চ আইনের আওতায় আনারও তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on linkedin
Share on email

সম্পর্কিত আরো খবর