পোশাক নিয়ে নারীর ওপর জোর খাটানো হবে না: ডা.শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, পোশাক নিয়ে নারীদের ওপর জোর খাটানো হবে না।

তিনি বলেছেন, মা-বোনেরা ঘরেও সুরক্ষিত থাকবেন, কর্মস্থলেও সুরক্ষিত থাকবেন।

তাদের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাতে পারবে না। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় যে, আমরা ক্ষমতায় এলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না।

কিন্তু কথা দিচ্ছি -এমনটা হবে না।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মহানবী (স.) সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নারীদের যুক্ত করেছেন। যুদ্ধ ক্ষেত্রেও নারীদের যুক্ত করেছেন।

তাই আমরা তাদের আটকে রাখার কে ? তারা সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের জন্য আত্মনিয়োগ করবেন। তাদের পোশাক নিয়ে আমরা বাধ্য করব না।
জাতীয় স্বার্থে দল ও ধর্মের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করবে জামায়াত উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। ইনসাফ কায়েম করতে চাই। যেখানে মানুষ চাইলেও অধিকার পাবে, না চাইলেও অধিকার পাবে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ যেন শিক্ষা পেয়ে মানুষ হয়। শিক্ষা নিয়ে যেন ডাকাত না হয়। এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা গড়ে তুলতে চাই।

আমরা এমন একটি দেশ চাই যেখানে মসজিদ, মন্দির, মঠ ও গির্জা কোনো কিছুই পাহারা দেওয়া লাগবে না উল্লেখ করে জামায়াত ইসলামীর আমির বলেন, আমাদের দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চমৎকার বাগান। এ বাগানের মধ্যে হুতোম পেঁচা ঢুকে পড়ে। এদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।

একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীও ভিআইপি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তারা তিনদিন পরিষ্কার না করলে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারব না। তাই তাদেরও মর্যাদা দিতে হবে। সেই সম্প্রীতির বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই। আমরা জাতীয় স্বার্থে দল ও ধর্মের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে চাই। এ দেশকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ বানাতে চাই। কিন্তু আকাশে কালো শকুন ঘুরছে। এ শকুন মাঝে মাঝে ফুঁস করছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। যে যে যেভাবেই উসকানি দেক, আমরা ফাঁদে পা দেব না।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কুরআন দ্বীন ও মজলুমের কথা বলতে গিয়ে সারা দেশে যত মানুষ প্রাণ দেননি, তার চেয়ে বেশি প্রাণ দিয়েছে সাতক্ষীরার মানুষ। তাই জামায়াতের কাছে সাতক্ষীরার অবস্থান অনন্য উচ্চতায়।

জামায়াত আমির বলেন, আমাদের দেশে অফুরন্ত সম্পদ। কিন্তু তা কাজে আসছে না। যারাই ত্রাতার দায়িত্বে থাকে, তারাই পকেট ভরে। বিগত সরকার সাতক্ষীরার মানুষের ওপর জুলুম করেছে। খুন করেছে। গুম করেছে। জনগণের অধিকার দেয়নি। তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে খুন করেছে। জামায়াতের দুজন আমিরসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। গত ০১ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশকে খুনের বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। শত জুলুম অত্যাচারের পরও আমরা পালিয়ে যায়নি। দেশকে যারা ভালোবাসে তারা পালাতে পারে না। আমরা এ দেশকে গড়তে চাই। এই দেশের এক ইঞ্চি মাটিও আমরা ছাড়ব না।

এর আগে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা সম্মেলনস্থলে আসতে থাকেন। দুপুর হতে না হতেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ।

সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির শহিদুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জতউল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাদ্দিস রবিউল বাসার, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম ও জেলা সেক্রেটারি গাজী আজিজুর রহমান।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on linkedin
Share on email

সম্পর্কিত আরো খবর